বরিশাল/News বরিশালের সর্বশেষ সংবাদ

Wednesday, November 12, 2025

বরিশাল নদী বন্দরে শ্রমিকলীগ কর্মী নাসিরের দাপট: প্রবেশ টিকিট কালোবাজারি ও দূর্নীতির ছায়া

 


বরিশাল নদী বন্দরে শ্রমিকলীগের এককর্মী নাসিরকে কেন্দ্র করে এলাকায় নানা ধরনের অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ও বিশ্বাসযোগ্য সূত্রগুলো দাবি করছে, স্থানীয় শুল্ক প্রহরী ও কয়েকজনের সঙ্গে যোগসাজশে নাসির দীর্ঘদিন ধরে প্রবেশ টিকিট কালোবাজারি, ঘাট নিয়ন্ত্রণ ও অনৈতিক আয়-রসদ পরিচালনা করে আসছে। এসব কাণ্ডে নাসিরের ভূমিকা নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বেকার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মহানগর শ্রমিকলীগ সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাসের প্রভাব শুরুতেই বরিশাল নদী বন্দরের কার্যক্রম সংগ্রহ-প্রসেসিংয়ে দৃশ্যমান ছিল। ওই সময় থেকেই নাসিরকে ঘাটের নানা কাজে যুক্ত করে রাখা হয়—যার সূত্র ধরে পরবর্তীতে টিকিট কালোবাজারি ও অবৈধ আয়-রসদের অভিযোগ ওঠে।


অভিযোগের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সময় হিসেবে ২০২৪ সালের ২৫ মার্চের রাতের ঘটনাটিকে যারা অনুসরণ করেছেন তারা বলছেন—নদী বন্দরের ২ নং কাউন্টারে কর্মরত শুল্ক প্রহরীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে কানে ধরে ওঠবস ও মারধরের অভিযোগে তোলা হয়। সেই ঘটনায় তিন শুল্ক প্রহরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়; ঘটনা তদন্তে নাসিরকে সরাসরি ছোঁয়া না গেলেও তিনি কৌশলে পলানবাহিত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


আরও অভিযোগ উঠেছে, ২০২২ সালের ২৭ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক অভিযানে বন্দরের ২ নং কাউন্টার থেকে ৮৬৩টি পুনরায় বিক্রয়ের জন্য রক্ষিত প্রবেশ টিকিট ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পরেও স্থানীয়ভাবে জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি চলে—কিন্তু নাসির সে সময়ে কীভাবে অক্ষত থাকলেন—এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।


সূত্রগুলো আরও বলেছে, তদারকি ও বদলি-নিয়োগের কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও দীর্ঘমেয়াদি নজরদারি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না থাকায় নাসির পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং দেবনাগর ঘাটে ও অন্যান্য কার্যক্রমে প্রভাব তৈরি করেন। স্থানীয়রা বলেন, শ্রমিকলীগের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।


সংবাদটি নিশ্চিত করতে বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রয়োজনীয় তথ্য নেওয়া যাচ্ছিল না। নাসিরের ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার রিং করা হলেও ফোন রিসিভ করা হয়নি। স্থানীয় এক রাজনৈতিক পরিচিত সূত্র নাম প্রকাশ না করতে চাওয়ায় বলেন, “নাসিরের সঙ্গে এমনকি মহানগর শ্রমিকলীগের কেউ কেউও যোগযোগ রাখেন—তার প্রভাব বিস্তার দীর্ঘদিনের।”


অভিযোগ ভিত্তিক সংবাদে সতর্কতা: উপরে বর্ণিত অনিয়ম ও অভিযেগসমূহ স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য ও অভিযোগভিত্তিক; এখনও আইনগতভাবে প্রমাণিত হয়নি। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মন্তব্য নেওয়া ব্যর্থ হলে তা আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি কর্তৃপক্ষ বা অভিযুক্ত পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রতিকার, ব্যাখ্যা বা বক্তব্য পাওয়া যায়, তা পরবর্তী খবরে তৎক্ষণাৎ যুক্ত করা হবে।


স্থানীয় জনগণ ও নাগরিক সামাজিক সংগঠনগুলো অবিলম্বে তদন্ত ও দায়সর্বতার দাবি জানান। তারা বলেন, সরকারি রাজস্ব রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া উচিত—নাহলে বন্দরের স্বাভাবিক সেবা ও সাধারণ ভোক্তার অধিকার আর নিরাপদ থাকবে না।

Powered by Blogger.